কথা কি শেষ হয়ে যায় - সব কথা ?

প্রাক্তন, পুনরায় চাওয়া, মারাত্মক ভুলগুলো
আমারও কিছু-একটা লাগে; তুমি তো ধানজমি পেলে, গাই-গরুও আছে তোমার- সজনেগাছে শুঁয়োপোকাও আছে; আজ না হয় কাল, তোমার মেয়ের গায়ে - প্রজাপতি উড়বে আয়নার কাছে চিরুনি না-পেলে , মেলা থেকে চলে আসে কাঠের কাঁকই; তোমার ছেলেকে বলিহারি, তোমার শাড়িপাড় ধরে চাঁদের পাড়ে, একা— আমারও যে কিছু-একটা লাগে; কী লাগবে ভাত না রুটি, পিঁড়ি না পৈঠা - আমাকে শুধায় না কেউ। আমি শুয়ে থাকি বিজন-ভূঁইয়ে; মেঠোফুলের পাশাপাশি, কে বলে জলের গন্ধটা নাই; কুমারী-কাসাই পুরনো হয়ে গেছে, আমাকে না-হয় দ্বারকেশ্বর দিলে

মাধবী
সেই সময়ে সমাজে নারীর স্থানটি কি রকম ছিল? আজকের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সেটা বিচার করা কি সমীচীন? নারীর কুমারীত্ব কি জৈবিক, না কি মানসিক? তার বাধ্যতামূলক বহুগামীতা কি আজকের সমাজ মেনে নেবে? মাধবীর গর্ভে জন্ম নিয়েছিল চার চারটি রাজবংশ। তার সন্তানরা জড়িয়ে পড়েছিল ‘দশ রাজার যুদ্ধে’। মাধবীর গর্ভ থেকেই জন্ম হয়েছিল কুরুবংশের পূর্বজগণ। যদু বংশেরও। মাধবীর কালের বহু পড়ে বেদ সৃষ্টি হল। তার পড়ে রামায়ণ মহাভারতের সৃষ্টি। মাধবীর গল্প মহাভারতের উদ্যোগ পর্বেই বলা হয়েছে। এইসব কাহিনীতে সব কালেই এক একেকজন বিশ্বামিত্রের দেখা পাই। এই বিশ্বামিত্র কি গায়ত্রীর রয়য়িতা? কিম্বা বশিষ্ঠের সমকালীন? মাধবীর কারণেই অসুর আর দেবকূল, অঙ্গিরস আর ভৃগুর অনুগামীরা নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে একত্রিত হয়েছিলো?

হায় কৃষ্ণ
ভীমসেন হত্যা করেছে বটে, কিন্তু আসল হন্তারক তুমি হে মাধব! তুমিই তাকে অন্যায় যুদ্ধে প্ররোচিত করেছিলে। বুদ্ধি দিয়েছিলে ঊরুতে আঘাতের। প্রিয় বলরাম ক্ষুব্ধ হয়েছিল এই অন্যায় যুদ্ধে। হে মাধব, তোমার কুলবধু লক্ষণার কথা বিস্মৃত হয়েছিলে তুমি। বিস্মৃত হয়েছিলে প্রিয় সুযোধনের প্রাণের পুত্তলি লক্ষণার শোক। বৈবাহিক ছিলে তুমি সুযোধনের। ভীমসেন প্রতিজ্ঞা করেছিল যাজ্ঞসেনীর অবমাননার প্রতিশোধ সে নেবে। সে নিয়েছে। কিন্তু তুমি হে মাধব! কোন দুস্প্রভাবে তোমার মতিচ্ছন্ন হল? পুত্র সুযোধনের অঙ্গুলিসংকেত একমাত্র তোমার পানে। হ্যাঁ, শুধু তোমার দিকেই তার শেষ অঙ্গুলিসংকেত। তার পুত্রদের তুমি হত্যায় প্ররোচিত করেছো। ওই তরুণ নিষ্পাপ আমার দৌহিত্রগণের কি দোষ ছিল হে মাধব?

রঙ্গবতী
মন্দিরে ফিরে এসে আচার্য্য সুবর্ণনন্দীকে সকলকথার বিবরণ দিল রঙ্গবতী। তিনি শুধু বললেন, ‘এবার দেবী চণ্ডিকার ইচ্ছা!’ ‘কিন্তু আমার মনে কিছু প্রশ্নের উদয় হয়েছে, আচার্য্য!’ রঙ্গবতী আচার্য্য সুবর্ণনন্দীর দিকে তাকায়। সুবর্ণনদী বিস্মিত হয়ে বলেন, কি প্রশ্ন, মাতা?’ ‘আচার্য্য! যে মাতা পার্বতী আমাদের সকলের সৃষ্টিকর্ত্রী, সকল পৃথিবীর পালনকারী, তিনি দেবী চণ্ডিকার রূপ ধারণ করেন কেন? কেন তার লোল জিহ্বা, কেন তিনি করালদ্রংষ্ট্রা?’ আচার্য্য সুবর্ণনন্দী স্তম্ভিত হয়ে যান। ‘এ প্রশ্নের উত্তর তুমি পাবে মাতা, একটু ধৈর্য ধারণ করো!’