নিত্য, শুদ্ধ, বুদ্ধ, মুক্ত

blog-banner
Rant's

আমার সম্বন্ধে

Artwork By Fawad for Me

ভার্চুয়াল জগতে, ফেসবুকে ম্যাসেজ গুলোর রিপ্লাই দিতেই আমি একটিভ বা হয়তো সারাদিন কারো সাথে বকবকানি চলছে এমনটিতো নাও হতে পারে। আমার ফেসবুক টাইমলাইন জুড়ে প্রযুক্তি বিশারদদের স্ট্যাটাসে ভেসে যাচ্ছে বা টুইটারে প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট সবকিছু ফলো করার প্রবনতা থাকলেও বুকমার্ক কিন্তু অন্য কোন কথা বলতে পারে। আমার ফোন হাতে নিয়ে ব্রাউজারে একসাথে ১০-১৫ টি ট্যাব খোলা থাকলে" সে বুকমার্কগুলোতে "প্রতিলিপি" থেকে "মিডিয়াম" বা "সিশার্পকর্নার" থেকে "ইউডাসিটি" গুলো হয়তো একেরপর এক খোলা থাকে।


Artwork By Fawad for Me

আমি চরম পর্যায়ের মুক্ত মতবাদে বিশ্বাসী ; মুক্তবাদের প্রতিষ্ঠালগ্নের সেই বাণী," আমি আপনার মতের সাথে একমত নাও হতে পারি কিন্তু আপনার মতামত প্রকাশের অধিকারের জন্য জীবনও বাজি রাখতে পারি" কথাটি মনেপ্রানে লালন করলেও কাউকে "গরু আমার মাতা" বা "জিহাদ মানেই বিধর্মীদের কল্লাফেলানোতে" বিশ্বাস-অবিশ্বাস প্রকাশ করে রোশানলে পরতে চাইনা,"ছোট্ট পরিবারটা"র জন্য।

নারী পোষাক দায়ী-কি দায়ীনা , বিবাহ জাতিতে-জাতিতে, ধর্মে-ধর্মে পক্ষে বিপক্ষে যেতে পারিনা। নারীবাদি হয়ে পুরুষকে ধুয়ে দিতে/ চলমান পুরুষবাদী হতে, বাসে উঠে দাড়িয়ে থাকা হঠাৎ ব্রেকে হেলেপড়া পুরুষটিকে হেনস্থ করতে না পারার মত/ যে করে তাকে চানক্যনীতিতে মনে মনে ঘৃনা করতে পারার মত গুনহীন হয়ে থাকাতেই অভ্যস্ত। এক শালিক, দুই শালিক/ গঙ্গার জল/ তুলসী পত্রের শুদ্ধতা-অশুদ্ধতায় অবিশ্বাসের মাত্রা চরমে। ডিপ্রশনে থাকা কাউকে মোটিভেট করার চেষ্টাটা না করে তার নিজের উপরেই রাখতে বা সুইসাইড করলে তাকে ধূয়ে দিতে অভ্যস্ত নই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ~ বিড়ালেও গাছে ওঠে। হিমু চরিত্র প্রভাব ফেললেও রবি বাবুর ফটিককে বা রাজাবাবুর শান্তকেই শ্রেষ্ঠ মানি ...

Life

ঠকে যাওয়া জিনিসটা ভারি মজার । এ শুধু যে ঠকে তারই ক্ষতি করে তা নয় , যে ঠকায় তারও ক্ষতি করে ।

মনে কর তুমি বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলে , " আমাকে কেমন লাগছে বল ?" বন্ধু যখন মিছে কথা বলে , আরে বাঃ দারুণ তো তখনই সঙ্গে সঙ্গে তার সততার ভান্ডারে একটু টান পড়ে , পড়েই ।

কাজেই ঠকে যাওয়া উভয়ত ।

যখন সাইকো কিলার বর পণের দাবিতে স্ত্রী কে খুন করে আত্মহত্যা বলে চালায় তখন সে নিজের মনুষ্যত্ব আর বিবেকবোধকেও খুন করে ।

আবার নিজের প্রেমিককে দিয়ে নিজের স্বামীকে খুন করায় যে স্ত্রী , সে কি আর প্রেমিকের বাহুবন্ধনে সেই সুখ পায় ???

যে শাশুড়ি বন্ধু হতে না পেরে শুধু বউমার নিন্দায় মুখরিত তিনি একই সঙ্গে বউমার বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হন ।

যে বউমা শ্বশুর শাশুড়ি কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠান তিনিও স্নেহ বঞ্চিতা ।

প্রতি মুহূর্তেই এই ঠকে যাওয়ার পারস্পরিক খেলা চলতে থাকে ।

ক খ'কে বন্ধু ভাবেনা , ভান করে শুধু , ক'য়ের কর্তা গ বাবু খ'কে নিয়ে রেস্তোরায় ভোজন করে রোমান্স মারান , গ খ'য়ের আনন্দ উপভোগ করে ঘরে এসে অপরাধবোধ থেকে ক'কে অতিরিক্ত ভালোবাসেন আর খ এর কর্তা ঘ কিছুই না পেয়ে বৌ পেটান ।

এরকম সমীকরণ সর্বত্র ।

জনতা ও রাজনীতিক একে অপরকে ঠকান , কবির ফাঁকি ঠকায় পাঠককে আর পাঠকের ভালোলাগা কমে ঠকেন কবি । ছাত্র শিক্ষক , দোকানদার খরিদ্দার , পিতা পুত্র , অভিনেতা দর্শক , মুখ ও আয়না সদা সর্বদা একে অন্যকে ঠকায় এবং নিউটনের অমোঘ তৃতীয় সূত্রের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী নিজেরাও ঠকে যায় ।

যার ভালোবাসা একবার পেয়েছি তাকে চিরদিনের জন্য নিজস্ব সম্পত্তি মনে করার প্রবৃত্তি মানুষের স্বাভাবিক। মানুষের মন কনসারভেটিভ, তাই যা পায় তাইই সে চিরস্থায়ী মনে করে। ভালোবাসাও যে কলসীর জলের মতো ঢালতে ঢালতে একদিন ফুরিয়ে যেতে পারে একথা সহজে কেউ কল্পনা করতে পারে না।

হঠাৎ একদিন যখন চোখে পড়ে, যার ভালোবাসা স্বতঃসিদ্ধ ভেবে নিশ্চিত ছিলাম সে আর ভালোবাসে না তখন বিস্ময় ও মর্মপীড়ার আর অবধি থাকে না।

কিন্তু ভালোবাসা চিরস্থায়ী হবে কেন? একদিন যে আমাকে ভালোবেসে ছিল তার চোখে তখন রঙিন নেশা ছিল। যৌবনের নৈসর্গিক স্নেহ প্রবণতা ছিল। আমিও হয়তো ভালোবাসার অধিক যোগ্য ছিলাম। এখন হাওয়া বদলেছে, চোখের রঙিন নেশা কেটে গেছে, আমিও আর সে আমি নই। তবে ভালোবাসা থাকবে কেন?

এক মাতাল রাস্তা দিয়া যাইতে যাইতে দেখল হাতীর পিঠে রাজা যাচ্ছেন । মাতাল হাত তুলিয়া বলল দাড়াও, আমি হাতী কিনব। রাজা মাতালকে বেঁধে রাখার আদেশ দিলেন। পরদিন মাতালের নেশা ছুটলে জিজ্ঞাসা করিলেন, হাতী কিনিবে? মাতাল হেসে বলল, ' মহারাজ, হাতীর খরিদ্দার চলে গেছে'।

আমরাও মাতাল, কিন্তু হাতীর খরিদ্দার কখন চলে যায় তা জানতে পারি না।