
কারে চাও তুমি ?
আমারে নাকি অন্য কাউরে ?
আমার আগেও তোমার জীবন কাটছে পাঁচ ভাতারে-
আমি হইলাম ষষ্ঠ,
পঞ্চমে কিংবা ষষ্ঠী পুরুষে কারো আপত্তি থাকলেও
আমার এসবে গুইনা কাম নাই ।
আমার সোজাসুজি একটাই কথা জিগাইতে আইছি-
'কারে চাও তুমি ?
আমারে নাকি অন্য কাউরে ?'
যদি আমারেই চাও, তাইলে আমার গতরেই বাস করবা,
নারীবাদী স্বাধীনতার কথা ভুইলা যাইও-
'তুমি আমার' এইডা দরকার হইলে সাইনবোর্ডে ঝুলামু
বিলবোর্ড ভাড়া কইরা টাঙাইয়া রাখমু !
তুমি আমার মানে তোমার আঙুল খালি আমিই ধরমু,
তুমি আমার মানে তোমার পাশে আমিই হাঁটুম
তোমার অফিস করনের দরকার হইলে
আমিই নিয়া ছাইড়া আসুম,
বিকেল ৫ টায় খাড়ায় থাকুম তোমার লাইগা ।
এই মডার্ন কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে-
আমার কলিগ চোদনের টাইম নাই,
কেউ তোমারে পার্টিতে ইনভাইট দিলে আমিও যামু লগে-
ছেলে-মেয়েতে হ্যান্ডশেকের গুস্টি চুদি আমি,
তোমার হ্যান্ড থাকবে আমার হ্যান্ডে-
কাউরে অভ্যর্থনা জানাইতে হাসিমুখে কইবা-
"গুড ইভিনিং"
হাতে হাত মিলাইয়া পাশ্চাত্য পোন্দানোর দরকার নাই,
আমি নিজেও এইসব পাশ্চাত্য পোন্দাই না !
তুমি তোমার পূর্ণ সংখ্যাসহ আমার হইয়া থাকবা-
ভগ্নাংশের কোন দরকার নাই,
আপত্তি আছে কোন ?
আমি আমার সবটুকু দিয়া দিতে এক পায়ে খাড়া,
ভাইবা চিন্তা জানাইও আমারে ।
লিবারেল মাইন্ডের গুস্টি চুইদা বলি-
এই পৃথিবীতে আমি হইলাম ফার্স্ট পারসন
তুমি আমার সেকেন্ড ।
বাদ বাকি কাক-পক্ষীসব থার্ড পারসন সিঙ্গুলার !
এবার আমার কথার উত্তর দেও-
কারে চাও তুমি ?
আমারে নাকি অন্য কাউরে ?
যদি কোনো পরলোক থাকে, ভালোই হয়। পুনর্জন্ম যদি থাকে, ভালো হয়। তোমার সামনে নতজানু হয়ে, কোনো প্রত্যাশা না রেখে, ফের একবার বলব, ভালোবাসি। তুমি তখন কী বলবে, ঠিক করে রেখো।
কিন্তু, পরলোক বলে যদি কিছু না-ই থাকে, ধরা যাক? না থাকে পুনর্জন্ম? জরুরি কথাটা হল, তাতে কোনোই অসুবিধে নেই। এই যে দেখা হল তোমার সঙ্গে, এক পৃথিবীতে, এক সময়ে, এ এমন আশ্চর্য এক পাওয়া,পরলোকের সম্ভাবনা যার কাছে তুচ্ছ হয়ে যায়।
ভেবে দেখো, আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড়ো কাকতালীয় ঘটনা হল ‘আমরা’ নিজেই। যখন ভাবি, নির্দিষ্ট একটি মুহূর্তে প্রায় ২০ কোটি স্পার্ম সেল, প্রত্যেকের আলাদা-আলাদা জেনেটিক কোড, তার ভিতরে বিশেষ একটিই যে জিতে গিয়ে ‘আমি’ হতে পারল, অলৌকিক এই প্রকৃতির কাছে আমি নত হই। যখন ভাবি, আমার বাবা আর মা হবেন যে দুজন নরনারী, তাঁদের দেখা হওয়াটাই জগতের ইতিহাসে কোনো অনিবার্য ঘটনা ছিল না, তবু তাঁদের দেখা হয়েছিল, নত হই। যখন ভাবি, এই একই অর্থে, আমার সমস্ত পূর্বপুরুষের অস্তিত্বই ছিল নিতান্ত দুর্লভ ‘চান্স’ মাত্র, তবু ঠিক ‘তাঁরা’ই সকলে ছিলেন বলে ‘আমি’ আছি, নত হই।
কিংবা ভেবে দেখো, যে-প্রায় ৭ বিলিয়ন-বিলিয়ন-বিলিয়ন সংখ্যক পরমাণু এক জায়গায় জড়ো হয়ে তৈরি করেছে আমার শরীর, তাদেরও একত্র হওয়ার কোনো দায়, কিছুমাত্র অনিবার্যতা ছিল না মহাবিশ্বে, তবু ঠিক ‘আমি’ই আছি, এখন, এই তোমার সামনে...
বলো দেখি, ‘ইহলোকের’ এই ম্যাজিক অন্য কোথাও আর কীভাবে পাব? সময় অনন্ত, জানি, স্পেসও অনন্ত, তার মধ্যে তোমার সামনে আমার এই ছোট্ট ‘থাকা’টুকু অক্ষয় হয়ে থাক।
চলো, এই মুহূর্তটা ফুরিয়ে যাওয়ার আগে, ওই রাস্তার ধারের দোকানে মাটির ভাঁড়ে চা খাই দুজনে। যাবে?
যেকোন সম্পর্কের যে কেউ যে একবার যাকে ছেড়ে গিয়েছে; ফিরে এসেও তার জন্য সেই আগের তাকেই পাবে! একবার যে তার এমন রূপ দেখিয়েছে, তাকে যে শত চেষ্টা করেও সেই বিশেষ করা যাবেনা! সাধারণ হয়ে যাবেই৷ জীবনপ্রবাহ নিম্নগতি হবে; উর্ধগতি হবে নয় একদম অধঃপতনে যাবে খুব বেশি হলে একটু একটু করে নরক যন্ত্রণা ভোগ করে অপারমুক্তি হবে। তবুও কি, সেই তাকেই ফিরিয়ে নেয়া যাবে? বিশেষ থেকে সাধারণ হয়ে যাবে চোখের পলকে; অনুভব করতে পারবে হয়তো কিন্তু বঃহিপ্রকাশ হয়তো সেই আগের মতোই থাকবে। এতোটুকু জীবনে কিসের ভয় হারানোর? হারানোর কিইবা আছে? সুখের থেকে স্বস্তি বড্ড বেশি অমূল্য। এই স্বস্তির মূল্য দিতে এসোনা।