তুমি তোমাতে ব্যস্ত, আমি তোমাতে মগ্ন

image

তুমি জানো না? আমি পুরুষ! ১০০০ বছরকার পুরুষতান্ত্রিকতার রক্ত আমার শিরায়। আমি তোমায় কষ্ট দেব বার বার, বিভিন্ন ভাবে, কারনে বা অকারনে। তাও যখন দেখবো, তুমি আমার উপর এক বিন্দু রাগ করছো, আমায় উপেক্ষা করছো। আমি প্রথমে তোমাকে দেখাবো, আমি তোমাকে ছাড়া বেশ ভালো আছি। তারপর ভেঙে পড়বো এক সময়; পাগলের মতো, বার বার বলতেই থাকবো,"তোমাকে চাই "...."শুধু তোমাকেই চাই"

এত জোর কেঁদে উঠবো! তুমি ঘাবড়ে গিয়ে ভাববে, একি পাগল? সত্যিই না ভালোবাসে....! তোমাকে এই জীবনে শুধু কাছে পাবার জন্য মন থেকে বারবার বলতে পারি, "তুমি যেও না আমায় ছেড়ে, আমি তোমাকে ছাড়া প্রবল অসহায়"। কারন জানি আমার শেষ বয়সে ,মা কাছে নাও থাকতে পারে কিন্তু তুমি ঠিক থাকবে... স্বার্থপর ভাবো, শিশু ভাবো, পাগল ভাবো, অপরিণত ভাবো; যা খুশি ভাবো, কিন্তু ছেড়ে যেতে পারবে কি আমায়?



মানুষের জীবনে তিনটি মৌলিক চাহিদা- খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান। কিন্তু আর একটা অন্যতম প্রধান চাহিদার কথা এর সাথে আমারা উল্লেখ করিনা যার নাম 'ভালবাসা '। এই ভালবাসার খোঁজে আমরা কখনো দিকভ্রান্ত নাবিক হই,অকূল মন-দরিয়ার, কখনওবা ধু ধু মরুভূমিতে পিয়াসি বেদুইন। হ্যাঁ,ভালবাসার এই নিশির ডাকে, ভুল পথেও আমরা চলি, এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় আছড়ে পড়ি, মন ভেঙে যায়, মনের ভিতর প্রজাপতির মতো উড়তে থাকা স্বপ্ন গুলো, ডানা গুঁড়িয়ে অভিশপ্ত বাতাসে হারিয়ে যায় ইতস্তত। এর পরের সময়টা ভুল রাস্তার এক কোনে কেবল বসে থাকার সময়,রোদ, বৃষ্টিতে নিজেকে পুড়িয়ে, শুন্য মনে কেবল চেয়ে থাকার সময়। টিক-টক-টিক-টক....কালচক্রের ঘড়ি এক সময় জানান দেয় জীবনটা দুঃখিত হয়ে কেবল কাটানোর নয়। আমরা ভুল পথ থেকে মুখ ঘুরিয়ে হাঁটতে থাকি সঠিক পথে, পথের দুপাশে দেখতে পাই অনেক আয়না, যাবার সময়ও ওরা ছিল,খেয়াল করিনি। প্রতিটি আয়নায় থমকাই, নিজেকে দেখি। একটু একটু করে বুঝতে পারি ভুলগুলো। চিনতে থাকি নিজেকে। ফের ভালবেসে ফেলি; নিজেকে। একটা স্বপ্ন প্রজাপতি এসে বসে কাঁধের উপর; আমি আনমনে গলা ছেড়ে গেয়ে উঠি "ও জীবন রে.... ও জীবন ছাইড়া যাস না মোরে,তুই জীবন ছাইরা গেলে...আদর করবে কে জীবন রে?"....

image

সে বার আমরা, উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। তোকে সেবারে আমি কি ভেবে জানিনা "অরু" ডেকেছিলাম। পরে দেখেছি, তুই সেই নামটার এতোই যত্ন করেছিস; তোর প্রথম কবিতার বইটাতে সেই নামটা দিয়ে দিয়েছিস। বিশ্বাস কর, তুই, এদেশে জন্মালে আমার এতোদিনে সংসার হতো। আমার প্রেম ভাঙ্গার পরের সময়টাতে যে তোর থেকে সবসময় এতোকিছু পেয়েছি।

আমাদের সেই পছন্দের গানটার কথা তোর মনে আছে? কি যে বেসুরো করে গলা মিলাচ্ছিলাম।

রাত চারটায় উঠে মদ খেয়ে তোকে আমি একটা কল করে আবার কল কেটে দিয়েছিলাম। কি যে পাগলামি করলি সেইবারে! আমিতো ভালোবাসা পাবার যোগ্য নই! তবুও, কি জন্য তুই আমাকে এতো ভালবাসলি?

image

ভুলে থাকা বুঝি খুব সহজ দেবু দা?
এইযে! দিনের পর দিন, মাস- বছর -সন্ধ্যা -ভোর চলে গ্যালো!
একবার ও তোমার প্রেম রেখে আমার ঘরে এলে না!
শুনেছি বেশ্যাদের ও ভালোবাসবার অধিকার আছে!
কবিত্ব বিকোয় চার আনা দরে!
আমার শাড়ির কুচি তো তারচেও কমে খোলে দেবু দা!
শুনেছি তুমি ঘরের গীতা আর কবিতা একসাথে বেচে দিয়েছো।..
কই! বাজারের মেয়ে হয়েও বাজারে তোমার কবিতার ভাঁজে আমার শরীর পেলাম না!
কে-গো? কে আছে তোমার গীতা কোরআন কবিতায়?
শুনেছি তুমি সওদা করো, দুটো আয়াতে একটা কবিতা!
আমি তোমায় আমার সারারাত দেবো, আমায় একটা তুমি সমেত ছন্দ দেবে?


image

অরু,

প্রেমিকা একটু পাগলী ধরণের হবেই.....হঠাৎ প্রেমে পাগলাপারা হবে....হঠাৎ তুমুল হাসবে....... হঠাৎ "আমি তো পুরানো হয়ে গেছি" বলে কাঁদবে.....বা এমনও হতে পারে একটা নতুন পোশাক বা চশমা অথবা মোজা পড়ে, অনেক আনন্দ নিয়ে বললো "এটা কেমন গো?".....আপনি আপনার কিশোর মনের খিল্লি নিয়ে, জোরে হেসে উঠলেন, আর বললেন, "বাচ্চাদের মতো"...সে বলবেই বলবে, "আমি তো হাস্যকর... জোকার! তোমার যোগ্য নই"......নিজের মেয়ের অভিমান যদি একটা আলিঙ্গন বা আইসক্রিম অথবা চকোলেট দিয়ে ভাঙানো যায়..... প্রেমিকারও যায়......যদি না পারেন....আপনার ভালোবাসাটাই পাপ...... প্রেমিকা হিংসুটে হবে না!!..অভিমান করবে না যখন অন্য মেয়ের প্রশংসা করবেন তার সামনে বা লক্ষ্য করবে না পোস্টে অন্য কারো কমেন্ট অথবা সামনাসামনি অন্য কারো চাউনি.....কথায় কথায় দেবে না অন্য নাম তুলে খোঁটা....! তো কে দেবে!!!! কিন্তু তার জন্য ব্লক করবে না,ছেড়ে চলে যাবেনা,নিমেষে.....আপনি পুরুষ আপনি যাবেন কেবল জানি.....মেয়েদের থাকে এক আকাশ অভিমান, আর আপনাদের এক পাতাল ইগো.....স্বীকার করুন, বা নাই করুন। প্রেমিকা অসম্ভব দজ্জাল হবেই....হওয়াটাই স্বাভাবিক...... যে নজর রাখবে আপনার ভুলগুলি..... যা আপনি অজস্র অজুহাতে সাম্যতা দিতে চেষ্টারত.....সে অভিমান করবেই... ..কিন্তু জানেন কী প্রত্যেক প্রেমিকা, যার কাছে তার "জীবন" কেবল আপনি, অবচেতন মনেও কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে! সে হয়তো আপনাকে অজস্র কটূ কথা বলবে, কিন্তু আর কেউ বলুক আপনার সম্বন্ধে....তা নিজের প্রিয় বান্ধবীই হোক না! সবটুকু প্রাণে আত্মসাৎ করে বলবে, " ও খারাপ মানুষ নয় রে! হয়তো আমারোও কিছু ভুল আছে! আমি হয়তো তাকে সেই ভালোবাসা দিতে পারিনি!" আপনি কী জানেন..... এমন মেয়েকে ভালো না বাসাটা পাপ! ধরুণ, হঠাৎ অনুভব করলেন,আপনার আপাত শান্ত প্রেমিকা ইদানীংকালে তুচ্ছ কারণে যখন তখন ঝগড়া করছে....বা কথায় কথায় হুমকি দিচ্ছে.....সাবধান হোন.... ধরুণ, আপনার সদা বাচাল প্রেমিকাটি হঠাৎ গুম মেরে গেছে। অস্বাভাবিক নিশ্চুপ। আপনার তাতে বেশ আনন্দই হচ্ছে। কিন্তু সাধু সাবধান..... ধরুণ, আপনার প্রেমিকা মেসেজে বা ফোনে....হঠাৎ আপনার নাম ধরে ডেকে উঠলো....আপনি প্রত্যুত্তর দিলেন..."কী?".... উত্তর এলো, " কিছু না".... আপনি মনে মনে ভাবলেন, "যাহ! শালা!".... ধুর মশাই আপনি বড্ড বোকা.... ইদুঁরের মতো ব্যস্ত জীবন....টুকরো টাকরা অজস্র চাওয়া পাওয়া....আসলে আমরা তার পিছনেই অনবরত ছুটে চলি... যেটুকু আমাদের পাওয়া হয়নি.....আর মায়ের আঁচল বা প্রেমিকার হাসির মতো পাওয়াগুলি সরতে থাকে দূর থেকে বহু দূর..... উপরিউক্ত প্রতিটি সমস্যার ঔষুধি সামান্যই....হঠাৎ ফোন করে বলা "ভালোবাসি রে পাগলী"....বা "আজ পড়তে/অফিসে যেতে হবেনা,চ বেড়িয়ে আসি"... বা অন্তত সেই দৃষ্টিতে এক ঝলক তাকানো, যা নিয়ে আপনি তাকাতেন প্রেমের শুরু দিকে........ একটু "সময়" এও প্রেম বাড়ুক...দূরত্ব নয়.... "তার রাগী মাথা। অবুঝপনা। টুকরো অপমান! আদর চোখে,ঠিকই ভাঙে...আসমানী অভিমান"।