
এমেয়েটা শুধু বলছিলো, একটা কফির দাম সাড়ে তিনশো টাকা কেমনে হয় এটা শুনেই উত্তেজনার নাতিরা এরে ওয়াইফ ম্যাটেরিয়াল বানাই দিছে। দুইদিনের দুনিয়ায় চাইর দিন আপনারা এরে তারে ওয়াইফ ম্যাটেরিয়াল, জামাই ম্যাটেরিয়াল বানাই দেন। রুচির শাউয়োর্ভিক্ষ হইলে যা হয় আরকি।
শুনতে তিতা হইলেও সত্য আপনাগো আকাঙ্ক্ষা ছোট। শখের বেডি সাড়ে তিনশো ক্যান তিন হাজার দিয়া খাইতে চাইলে আপনে যেনো এফোর্ট করতে পারেন এইটা মাইন্ডে সাটাইয়া নেন। দেখবেন এই জিদ আপনারে অনেক দূর নিয়া যাইবো।
শখের বেডি ত্রিশ টাকার কফি খাইতে চায় বলে বউ বানাইয়েন না বরং টাকা থাকলে আপনে তারে তিন হাজার টাকার কফি খাওয়াইতেও দুইবার ভাববেন না এই মেন্টালিটি বানান।
আমার গার্লফ্রেন্ড চেয়েছিলো বাম স্তনে ট্যাটু আঁকাতে,
আমার পছন্দ অনুযায়ী আঁকিয়েছে ক্লিভেজে।
এটা দাসত্ব নয়, মিউচুয়াল ভালোলাগা।
আমার পছন্দ ওর দেহে শাড়ি, কিন্তু ওর প্রিয় ফতুয়া,
ফতুয়ায় ওর ছুরির ফলার মতো ঔদ্ধত্য আত্মবিশ্বাস যোগায় আমাকে।
এটা জয়পরাজয় নয়, আত্মিক সমর্পণ।
আমার প্রিয় অনটপ, ওর মিশনারি,
ঘামথুথুঅশ্রুতে আমাদের সঙ্গম পরিণতি পায় বুকে-বুক।
আমরা অধুনা বাৎসায়ন, আমরা সর্বস্বে প্রেম।
তোমরা বললে─ "ছিঃ!"
আমরা হাসলাম 'হিপোক্রিট' শব্দটি চিনতে পেরে।

নারীর সামনে হাত এগিয়ে দিলো পুরুষ।
পৃথিবীতে আজও বিশ্বাস আছে বলে, হাতখানা নিঃসঙ্কোচে মুঠোয় পুরে নিলো নারী।
নারীর মুঠোয় হাতখানা জমা রেখে পাশে বসলো পুরুষ।
পৃথিবীতে আজও বিশ্বাস আছে বলে, উভয়ের মধ্যিখানে একরত্তিও ফাঁকা রাখলো না নারী।
পুরুষ স্বগতোক্তি করে উঠলো— "জীবন সুন্দর!"
পৃথিবীতে আজও বিশ্বাস আছে বলে, নারী জানালো— "তুমি আছ বলেই।"
নারীর রূপের প্রশংসা করলো পুরুষ।
পৃথিবীতে আজও বিশ্বাস আছে বলে, স্মিতহাসিতে নারী বুঝিয়ে দিলো, অরূপও তোমাকে দিলাম।
জীবিকার অন্বেষণে ফিরে যাচ্ছে দু'জন দু'দিকে।
পৃথিবীতে আজও বিশ্বাস আছে বলে, উভয়েই দীর্ঘশ্বাসের সাথে মেখে নিলো অমোঘ ইচ্ছেটি— 'দেখা তো হবেই।'
উভয়ের আর কখনোই দেখা হয়নি।
পৃথিবীতে আজও বিশ্বাস আছে বলে, দু'প্রান্তের দু'জন স্বীকার করলো, সুখের প্রয়োজনেই ওরা আজ বিচ্ছেদে।
বিশ্বাস মুচকি হাসলো— "এটা আত্মপ্রবোধ মাত্র। সত্য হলো, তোমরা পাওনি পরস্পরকে।"
তখনই বিশ্বাসকে শুনিয়ে দিলো বিচ্ছেদ— "পাওয়া মানে পাশাপাশি থাকা নয় রে বোকা।"

অগোছালো স্বামীস্ত্রীর চেয়ে পরিপাটি অন্য নারী ও পুরুষকে ভালো লাগে আমাদের।
সজ্জাহীন স্বামীস্ত্রীর চেয়ে ঝকঝকে অন্য নারী ও পুরুষকে ভালো লাগে আমাদের।
রোজ দেখা স্বামীস্ত্রীর চেয়ে মাঝেমাঝে দেখা অন্য নারী ও পুরুষকে ভালো লাগে আমাদের।
তবু আমরা স্ত্রী ও স্বামীর কাছেই ফিরে আসি।
সে সমুদ্র, অন্যরা সৈকত।
সে বাগান, অন্যরা ফুল।
সে ঘর, অন্যরা উঠোন।

আমাকে বাজারে তোলা হলো।
পুরো দেহে চক দাগিয়ে লিখে দেওয়া হলো প্রত্যেক অংশের বাজারমূল্য।
সবচেয়ে বেশি মূল্য মগজের─ ওটা এখনো ফ্রেশ, অব্যবহৃত।
যৌনাঙ্গের মূল্য খুব কম─ ওটার সঠিক ব্যবহার হয়নি, বিধ্বস্ত।
পায়ুপথের মূল্য তো নেই বললেই চলে─ জন্ম থেকে ওটা মেরে আসছে সভ্যতা।
হৃদয়ের মূল্য প্রকৃত মূল্যের আদ্ধেক─ বাকি আদ্ধেকটা নেই, কারও কাছে জমা রয়ে গেছে, চিরকাল।
হাতের মূল্য যা, পায়েরও তা-ই, পেট ও পিঠেরও─ নামমাত্র, ওসব কাজের কিছু নয়, আজীবন অন্যের অনুকারী।
চোখ দু'টো অর্থহীন, নাক-কানও কাজেই আসেনি─ ওগুলোর মূল্য সবচেয়ে কম।
যে অংশে কিছুই দাগানো হয়নি, যে অংশের কোনো মূল্যই নেই, জিহ্বাটি আমার─ "এ দিয়ে কী হয়?"
প্রশ্ন সবার?
আমাকে বাজারে বিকিয়ে দেওয়া হলো,
আমি দক্ষিণ এশিয়ার কালার্ড দোপেয়ে, রেলিজিয়াসলি ভয়ানক সেন্সিটিভ;
আঁতিপাঁতি খুঁজেও, যে-দেহটির ভিতরে, কোনো মেরুদণ্ড পাওয়া যায়নি।

কেবল সে'ক্স করার জন্য বিয়ে কোরো না।
বুড়ো হয়ে যাচ্ছ বলে বিয়ে কোরো না।
বিয়ের বয়স হয়েছে বলেই বিয়ে কোরো না।
একাকীত্ব দূর করার প্রয়োজনে বিয়ে কোরো না।
আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়ার ভাবনায় বিয়ে কোরো না।
অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছ বলে বিয়ে কোরো না।
তাকে হারাতে চাও না বলেই বিয়ে কোরো না।
পরিবার চাপ দিচ্ছে─ এই কারণে বিয়ে কোরো না।
বিয়ে প্রথাটি তোমার পছন্দ বলেই বিয়ে কোরো না।
করুণা করে বিয়ে কোরো না, অন্যের করুণায় বিয়ে কোরো না।
পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে কিংবা চাপে বিয়ে কোরো না।
বিয়ের সাজে নিজেকে সাজানোর ফ্যান্টাসিতে বিয়ে কোরো না।
সন্তানের আশায় বিয়ে কোরো না।
তোমার বন্ধুরা বিয়ে করে ফেলছে─ এই চাপে বিয়ে কোরো না।
শারীরিক রূপের মোহে বিয়ে কোরো না।
শিক্ষা দেখেই বিয়ে কোরো না।
কৌতূহল ও ফ্যান্টাসি নিবৃত্ত করার জন্য বিয়ে কোরো না।
কিন্তু─
বিয়ে কোরো,
যদি তোমার বোধ জন্মায়─
হ্যাঁ সংসার আমাকে অসম্পূর্ণ মানুষ থেকে পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত করবে।
এমন বোধ থেকে গড়া সংসারই
এলোমেলো মানুষকে সুশৃঙ্খল করে।
অসম্পূর্ণ দু'টি জীবনের পরিপূরকতায় একটি সম্পূর্ণ জীবন যাপনই─ সংসার।
এই কারণটি ছাড়া, উপরোল্লিখিত কারণগুলোর জন্য করা বিয়েটি─ একটি স্বার্থপর বাণিজ্যচুক্তি মাত্র।