
সবকিছুতেই ফাটল থাকে,
ওখানটায় আলো প্রবেশ করতে দাও।
হতাশের হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও হতাশা নয়, একচিলতে আশা প্রবেশ করতে দাও।
দুখীর হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও দুঃখ নয়, একচিলতে সুখ প্রবেশ করতে দাও।
দরিদ্রের হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও দারিদ্র্য নয়, একচিলতে যোগ্যতা প্রবেশ করতে দাও।
বিশ্বাসঘাতীর হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও প্রতারণা নয়, একচিলতে বিশ্বাস প্রবেশ করতে দাও।
অপ্রেমীর হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও প্রেমহীনতা নয়, একচিলতে ভালোবাসা প্রবেশ করতে দাও।
অপমানিতের হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও আশঙ্কা নয়, একচিলতে প্রতিবাদ প্রবেশ করতে দাও।
সংসারীর হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও ক্লেদ নয়, একচিলতে কবিতা প্রবেশ করতে দাও।
বাউলের হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও সন্ন্যাস নয়, একচিলতে চুম্বন প্রবেশ করতে দাও।
পাথরের হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও ধূলো নয়, একচিলতে অশ্রু প্রবেশ করতে দাও।
আঁধারের হৃদয়ে ফাটল থাকে;
ওখানটায় আরও শূন্যতা নয়, একচিলতে রশ্মি প্রবেশ করতে দাও।
সবকিছুতেই ফাটল থাকে,
ওখানটায় আলো প্রবেশ করতে দাও।
যে মেয়েটাকে আমি ভালবেসেছিলাম; আমি তাকে সতীসাবিত্রী ভেবে ভালোবাসিণী বা প্রেমে পড়িনি । আমি জেনেবুঝেই গিয়েছিলাম - ওই মেয়েটা অনেকবার প্রেম করেছে, বিরহ ভোগ করেছে, শক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, যে লোক মিষ্টি মিষ্টি প্রতারণা করে ওর সাথে প্রতারণা করেছে মেয়েটা সেই প্রতারককে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে চলে গেছে এবং আল্টিমেটলি তাকে আমি ছেড়ে গেলেও সে ভেঙে পড়বেনা কখনো। কিন্তু, সেই ভালোবাসায় আমি যখন প্রতি পদে পদে প্রতারিত হলাম! আমার মানসিক, শারীরিক শক্তি যখন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো ! সম্পর্কে আসার আগে এবং পরে ধীরে ধীরে আমি বা সে কমিটমেন্টের মাত্রা এগোতে থাকলাম। কোনকিছুই আমার দিক থেকে ছিলোনা; কারণ, আমি চাইনি নিজের ভিতরে কোন ইচ্ছা জাগিয়ে রাখতে।
আমার যতবার তাকে সবচেয়ে বেশি দরকার হয়েছে, ততবারই আমি দেখেছি আমার পাশে সে নেই। পুরুষ মানুষকে যে নুন্যতম বুঝাতে হয়- তুমি পারবে, তুমি পারো, তুমিই সেরা; তোমাকেই আমি চাই। তার বদলে, প্রতিনিয়ত শুনেছি- সবারই বেটার আছে। হয়তো !! লিখতেই ইচ্ছে হচ্ছেনা আর । আমি তার জন্যই কাঁদতে রাজি যার কাছে আমার একেকফোঁটা কান্নার দাম একেকটা রাতের দীর্ঘশ্বাসের সমান! ভুলে যেওনা- যুগের ধর্ম এই- " পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই! "
পুরুষের দিকে মায়া মমতা দিয়ে তাকানোর লোক খুউব কম। কেউ তাকায়ই না তেমন। যতদিন তারা প্রোভাইড করতে পারবে, ততদিন তাদের পিছে মানুষ লক লক করবে। তখন সেসব পুরুষের অবহেলাও সুন্দর, গালিও ভালো লাগে। রিক্ত, শূন্য নারীকে ভালোবাসার লোকের অভাব নাই। কিন্তু ভেংগে পড়া পুরুষের দিকে কেউ তাকায়ও না।
চরম উন্মুক্ত হতে হলেও, উন্মুক্ততার লক্ষ্মণ রেখা রাখতে হয়। নয়তো ব্লাকহোলে হারিয়ে যেতে হবে। যারা, চিন্তা করেন একটা সম্পর্কে থেকে অন্য সম্পর্কে বলে কয়ে জড়ানো যায়। তারা, অনুগ্রহ করে; নিজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আরো সতর্ক হোন। সীতার মতো সতী আর রামের মতো স্বামী কিংবা পরশুরামের মতো সন্তান প্রয়োজন নাই। আমি চাই, রাবনের মতো পুত্র বাৎসল্য প্রজাহৈতেশী রাজা। কর্ণ আর দুর্যোধনের মতো বন্ধু। কর্ণ ধোঁকা দিবে জেনেও, দুর্যোধনের মতো শান্ত থাকতে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ ও পারেনি। ভাই হলে, কুম্ভকর্ণের মতো; বিভীষণ চাই না।
আমি বেশ্যাদেরকে সম্মান করি; আমি ওদের পক্ষে। ওরা টাকা নেয়, দেহ দেয়। ওদেরকে প্রণাম করতে আমার একবারও ভাবতে হয়না; যতটা ভাবতে হয়, সমাজের ভদ্রবেশী মেয়ে/ছেলেদের প্রণাম করতে। মেয়ে রাতে বের হোক কি দিনে; আমি চাই, প্রত্যেকটা মেয়ে তারমতো করে উড়ে বেড়াক। খারাপ কাজ, দিনে-রাতে সবসময়ই করা যায়। শুধু, ভদ্রবেশীদের নিয়ে আমার যত ভয়; এরা, মন ভাঙ্গে - এরা ফেমিনিজমের একটা উল্টো পতাকা উড়িয়ে ধ্বংস করে দেয় দুনিয়া। সিগারেট - মদে ছেলেদের সাথে তুলনা; সিগারেট -মদ খারাপ, সে কাজ যে কেউ করলেই খারাপ। শিশ্ন থাকার জন্য এই কাজ সঠিক; কিংবা স্তন-যোনির জন্য হুট করে রেপ কেস ঠুকে দেয়া সঠিক এ আমি মানিনা। কিংবা অবাধ যৌনতা বা শরীর দিয়ে কার্য হাসিল করার মতো ব্যাপারেই যত ঘৃণা। আমার, রাবনের এক কথায় রথে চড়ে বসা কিংবা সোনার হরিণ দাবী করার মতো সতী নিয়েই যত সংশয়। ধ্বংস এখান থেকেই হয়। বের হোন, উড়ে বেড়ান- নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করুন। চরিত্রটা পবিত্র রাখুন; শিশ্ন নিয়ে জন্মেছি বলে, মাথা নোয়াতে আমার বরং গর্ব হবে।
আমরা পছন্দ করি সহজ-সরল, সাদাসিধে মানুষ। যার মধ্যে কোনো প্যাচ নেই, অন্যের বিষয় নিয়ে অহেতুক বাজে কথা বলে না। সামনে যা ভেতরেও তাই। ঘুরিয়ে পেচিয়ে এক কথার অর্থ অন্যটা মিন করে না। সদা হাস্যোজ্বল, বিনয়ী। যার কোনো কৃত্তিম অহংকার নেই। চালাকির কথা যার মাথায় আসে না। যে অযথা রাগ করে না, কারণে অকারণে অভিযোগ করে না। অথচ আমরা হতে চাই পুরোপুরি উলটো। চিন্তাভাবনা করি জটিল, হতে চাই আরও চালাক। এক কথার অর্থ অন্যদিকে ঘুরিয়ে ভাবি। অন্যকে জাজ করতে ভাললাগে। রেগে গিয়ে খুবই তৃপ্ত বোধ করি। অহংকারে আমাদের গর্ব বাড়াতে চাই। অন্যকে জাজ করার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে। অভিযোগের কোনো শেষ নেই। মানুষের থেকে দূরে থাকাও খারাপ আবার খুব কাছে থাকাও খারাপ, মাঝামাঝি অবস্থান আরো খারাপ।
'কাম হইতে হয় প্রেমের উদয়, প্রেম হইলে কাম থাকেনা' চাইতে হইলে সাধুর মত চাইতে হয়, রাক্ষসের মত নয়। আবার সমুদ্র মন্থনে অমৃতে রাক্ষস- দেবতা ভাগ এসে যায় বলেই সাধু কিন্তু সেই সাধুই রয়। দধীচি নিজের দেহ দিতে পারলেও ওই দেবী কিন্তু পূজার জন্য মানুষ মেরে ফেলে। সংসারে মানুষ হয়েতো জন্ম গ্রহন করেছি, শেষপর্যন্ত মানুষ হলাম কই?
একটা কথা আছে, আমরা যাকে হারাই; তারা কি আমাদেরকে হারায়? হ্যাঁ, অনেক বেশি করে হারায়। আমাকে রাজা ভট্টাচার্য (কলকাতার শিক্ষক এবং লেখক) কাকু একটা কথা বলেছিলো- নিজেকে এতো সুন্দর করে তুলো যে, মানুষ তোমার মত আর কাউকে খুঁজে না পায়। মহামারী মড়ক লাগিয়ে পার্থিব স্বাদে পেট টিপে দুঃখকে আত্মসাৎ করে, হারালাম পর্ণোমচি ভালোবাসাকে শীতের মিষ্টি মধুর স্পর্শতে!
সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও। ব্যস্ততা শেষে ভালোবেসে পাশে বসো। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, চোখের কাজল কেনো ধুঁয়ে যায় কারন খুঁজো। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, বুকের বাঁ পাশের জমিনে মায়ার সুপ্ত চারা লাগিও। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, রোজ রাতে যে ছেলেটি অভিমানে তোমায় পত্র লিখে, তাকে দুলাইনে উত্তর দিও। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, তপ্ত রোদে পুড়ে লেলুয়া বাতাসে মন ভাসিও। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, অভিমানি বালকের মান ভাঙাতে, তাহার দুটি হাতে হাত রাখিও। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, জোছনা রাতে সেলফোনে সাথি হয়ে, ছেলেটির সাথে চাঁদনি বিলাসে মাতাল হইও। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, খুব করে যে বুকের মাঝে তোমায় ছুঁয়ে থাকে, তাকে ভালোবেসে কিছু পাগলামি করো। সময় করে একদিন প্রেমিকা হইও, অনুভবের গল্প কথায়, তাকেই ভালোবেসো।
অনেক সময়ই অনেক কিছু বলার থাকে, বলাই হয়না, বলাই হয়না, "শুধু তোকে ভালোবাসি!" বলাই হয়না, "তোকে ছাড়া খুব কষ্টে থাকি!" বলাই হয়না, "কী রে ফোন করিস না কেন? মনে পড়েনা আমাকে?" বলাই হয়না, "জানিস কাল স্বপ্নে দেখেছি তোকে, কিন্তু এটাও বুঝেছি যে এটা স্বপ্ন, তাও জোর করে চোখ বন্ধ করেছিলাম!" বলাই হয়না, "ওই আবার আমাদের পছন্দের গানটা শুনছি এখন, লিঙ্ক পাঠাবো, এবার প্লিজ ডাউনলোড করে নিস, বারবার খুঁজে দিতে পারবো না !" বলাই হয়না, "অনেকদিন পরে কাঁদলাম!" বলাই হয়না, "কালকে রাতে খাইনি, কিন্তু তোকে তাও জানাইনি, ভাববি ন্যাকামো করছি!" বলাই হয়না, "আজকে লিখবো না, লিখলে বুঝে যাবি শুধু তোর জন্যে লিখছি!" বলাই হয়না, "আমি ভালো নেই!" বলাই হয়না, "তুই কেন একবারও জিজ্ঞেস করিস না আমার কথা!" বলাই হয়না, "কাজল পরিসনি কেন? অসুস্থ অসুস্থ লাগছে!" বলাই হয়না, "কী রে? প্রোফাইল পিকচার চেঞ্জ করিস নি কেন? মন ভালো নেই তোর?" বলাই হয়না, "একবার আসবি ফিরে, একবার শুধু, প্লিজ!" বলাই হয়না বলা ভুল, সবশেষে কী ভাবি জানিস, "যে তুই ভালোবাসিসই নি, ভালোবাসলে বলতে হয়না এসব কথা, নিজেই বুঝে যেতিস,প্রেমিকের চোখ গলার আওয়াজ শুনে, আর যদি সেটা নাই ধরতে পারলি তাহলে আর তুই প্রেমিকা হলি কোথায়? প্রেমিকা হলে ঠিক আঁকড়ে ধরতিস, ঠিক ধরতিস, ভালোবাসতে শিখতে হয় জানতে হয়, "গোপনে নেশা ছাড়াও এর মতন, যদি গোপনে প্রেমিক-প্রেমিকা হও" এর জন্য যদি কোথাও প্রাইভেটে কোর্স করায়, তোকে ভর্তি করাবো, আমিই টাকা দিয়ে ভর্তি করাবো, শুধু মন দিয়ে পড়বি, পাস করার জন্যে নয়, ভালোবাসে যে মানুষটা তার পাশে থাকার জন্যে,কেমন?"
আমি ওকে বলতে পারিনি- ও কাঁদলে আমার পুরো দেশটাকে গুঁড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর হাসি মানেই দাবায় অথইকে হারিয়ে দেওয়া। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর বুকের বোতাম খোলা না-থাকা আমাকে আশাহত করে। আমি ওকে বলতে পারিনি- ও মন খারাপ করলে কর্ণফুলী ধীরে বয়। আমি ওকে বলতে পারিনি- ও আমাকে প্রায়ই ঘুমোতে দেয়না। আমি ওকে বলতে পারিনি- ও বেকার বলেই আমি গোপনে কাঁদি। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর শ্রেষ্ঠত্ব আমাকে মানুষ বানিয়েছে। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর ছেঁড়া শার্টটি আমি আজো স্বপ্নে দেখি। আমি ওকে বলতে পারিনি- ও আমাকে হত্যা করেছে। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর কারণেই আমি স্বর্গে যাবো। আমি ওকে বলতে পারিনি- ও এদেশে জন্মালে আমার সংসার হতো। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর জন্যই আমি একমাত্র কবিতাটি লিখেছিলাম। আমি ওকে বলতে পারিনি- ওর জন্ম ভুল সময়ে বলেই আমি অন্যের বুকে। আমি তাকে বলতে পারিনি- বাংলা অভিধানে 'ভালোবাসা' শব্দটির স্থলে চুপটি বসে আছে ও। এই একুশ বছরে আমি একুশ শত মানুষকে কিছু না কিছু বলতে চেয়েছি। এই একুশ বছরে আমি একুশ লক্ষটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি কেবলমাত্র বলার ব্যর্থতায়। এখন আমি প্রায়ই ভাবি- শ্বাসের অনুবাদ পুরুষ বোঝে না বলেই উচ্চারণেই তাকে জানাতে হয় বুকের আর্তনাদ। এবং, উচ্চারণের ব্যর্থতা নারীকে ভুল ঘরে পৌঁছে দেয় অবেলায়। ব্যর্থতার এ-দায়, নারীরই।